নিউজ ডেস্কঃ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ১২ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পারপিতা ফাইহা (১৪) নামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। পারপিতা হলিক্রস স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে ২৯ তেজগাঁও রেলস্টেশন রোডের নন্দন রোকেয়া নামের ১২ তলার অ্যাপার্টমেন্টে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় পারপিতা স্কুলে থেকে ফিরে এসে বাসায় না গিয়ে লিফটে ভবনের ছাদে চলে যায়। স্কুলের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছাদ থেকে নিচে ঝাঁপ দেয়। আহত অবস্থায় পারপিতাকে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে পান্থপথের স্কয়ার হসপিটালে স্থানান্তর করা হয়। রাত ৮টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পারপিতার সহপাঠীরা অভিযোগ করেছে, স্কুলের উচ্চতর গণিতে ফেল করার অপমান সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। পারপিতা নবম শ্রেণির সি-শাখায় ফার্স্ট গার্ল। সি ও ডি শাখায় উচ্চতর গণিতের ক্লাস নেন শোভন রোজারিও নামের শিক্ষক। রাজধানীর ইন্দিরা রোডে তার বাসায় এ বিষয়ে ব্যাচ ধরে প্রাইভেট পড়ান। যেসব ছাত্রী তার কাছে উচ্চতর গণিতে প্রাইভেট পড়ে না, তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেন। এ বছর প্রথম সাময়িকী পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে সি ও ডি শাখার ১০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ জনকে ফেল করানো হয়। দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে ৫৫ জনকে ফেল করানো হয়। পারপিতা সি শাখায় ফার্স্ট গার্ল হওয়া সত্ত্বেও প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার উচ্চতর গণিতে ফেল করে।
পারপিতার সহপাঠীরা আরও অভিযোগ করেন, শিক্ষক শোভন রোজারিও পারপিতাকে তার বাসায় প্রাইভেট পড়তে বলেছিলেন। পারপিতা পড়তে রাজি হয়নি। পরপর একই বিষয়ে দুবার ফেল করায় স্কুলের অধ্যক্ষ পারপিতার অভিভাবককে বৃহস্পতিবার দেখা করার নির্দেশ দেন। এ খবর পেয়ে সোমবার থেকে পারপিতা আতঙ্কে ছিল। সে তার বাবা-মাকে বিষয়টি বলতেও পারেনি। মঙ্গলবার স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে। কিন্তু কোনো উপায় বের করতে পারেনি।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে হলিক্রস স্কুলের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা স্কুল শাখার মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। স্কুলের কোনো শিক্ষকের বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করেও কারো কোনো বক্তব্য মেলেনি।
তেজগাঁও থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, কী কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত করছে পুলিশ। বিষয়টি আত্মহত্যা নাকি অন্যকিছু তা ময়নাতদন্ত করলে জানা যাবে।
Leave a Reply