1. admin@dailypabna24.com : admin :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৭ অপরাহ্ন
Title :
পাবনা ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশন এর সেক্রেটারি রিয়াদ হোসেন বাবু’র জন্মদিন চাটমহরে চাঞ্চল্যকর লাবণী ও রিয়াদ হত্যার রহস্য উদঘাটন, ৩ আসামী গ্রেফতার পাবনায় আ.লীগ নেতা কামিল হোসেনের শীতবস্ত্র বিতরণ  সচেতন হয়েছে ট্রাক চালকেরা, কমেছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সুজানগরে শাহিনুজ্জামান শাহীনের নির্বাচনী গণসংযোগ সুজানগরে শাহিনুজ্জামানের নির্বাচনী গণসংযোগ সুজানগরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া চাইছেন শাহিনুজ্জামান দুবলিয়া বাজারে আ.লীগ নেতা কামিল হোসেনের শীতবস্ত্র বিতরণ  সুজানগরে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশায় শাহিনুজ্জামানের লিফলেট বিতরণ  সুজানগরে উন্নয়নের লিফলেট ও নতুন বছরের ক্যালেন্ডার বিতরণ

আমেরিকায় থাকতেন অধ্যক্ষ, বেতন নিতেন বাংলাদেশ থেকে

  • প্রকাশিত : শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১৯১ বার পঠিত

মূলত উচ্চ শিক্ষার্থে নয়, ডিভি লটারীতে দীর্ঘ ৫ বছর ২৭ দিন আমেরিকায় অবস্থান করেন অধ্যক্ষ রোকসানা খানম। এ ঘটনায় দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গভর্নিং বডির সাবেক এক সভাপতি। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার বেড়া উপজেলার কাশিনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ওই কলেজের অধ্যক্ষ রোকসানা খানম ২০১১ সালে মিথ্যাচার করে ডিজির অনুমতি ছাড়াই কলেজ গভর্নিং বডির তৎকালীন সভাপতি আব্দুল কাদেরের কাছ থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্ববেতনে ২ বৎসরের জন্য ছুটি নিয়ে আমেরিকায় যান।

গত ০৯/০৫/২০১১ তারিখ থেকে ০৮/০৫/২০১৩ পর্যন্ত আমেরিকা অবস্থান শেষে বাংলাদেশে এসে পুনরায় কলেজে যোগদান করার জন্য গেলে তখনকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি এসএম শাহাবুদ্দিন টুটুল উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বললে তিনি দেখাতে ব্যর্থ হন।

তখন তাকে কলেজ গভর্নিং বডি যোগদান করতে না দিয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কলেজের যোগদান করতে না পেরে রোকসানা খানম পুনরায় আমেরিকায় চলে যান। ঘটনাটি প্রশাসন মহলে জানাজানি হলে গত ২৯/১০/২০১৩ তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে বেড়া উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার মো. মনোয়ার হোসেনকে তদন্ত কমিটিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ২৪/১১/২০১৩ তারিখে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ.এইচ.এম.এ ছালেককে তদন্ত কমিটির প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে ২১/১০/২০১৪ তারিখে সরকারি আজিজুল হক কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবিএম মিশামুল হাবীব (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি) ও পর্যায়ক্রমে কমিটি পরিবর্তন করে ডিজির প্রতিনিধি সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদকে পুনরায় তদন্ত কমিটির মনোনয়ন দেওয়া হয়।

কিন্তু ৭-৮ বছর অতিবাহিত হলেও অজ্ঞাত কারণে তদন্ত কমিটির কেউই কোন রিপোর্ট অদ্যাবধি পেশ করেন নাই।

এদিকে দ্বিতীয়বার আমেরিকা থেকে ফিরে অধ্যক্ষ রোকসানা খানম তার উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের সনদপত্র গভর্নিং বডির কাছে শিগগিরই জমাদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ০৫/১১/২০১৭ তারিখে কলেজে যোগদান করেন।

কিন্তু সনদপত্র জমা দেব, দিচ্ছি বলে বলে এবং নানারকম অজুহাত দেখিয়ে তিনি কালক্ষেপন করতে থাকেন এবং পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে ম্যানেজ করে তাকে দিয়ে গভর্নিং বডির সভাপতিকে চাপ প্রয়োগ করে স্বপদে বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন।

কলেজের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা অভিযোগে জানান, উচ্চ শিক্ষার্থে নয়, ডিভি লটারীতে দীর্ঘ ৫ বছর ২৭ দিন আমেরিকায় অবস্থান করেন অধ্যক্ষ রোকসানা খানম। এসময় তিনি অনৈতিকভাবে সরকারি কোষাগার থেকে বেতনভাতা উত্তোলন করেছেন।

যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৯৪ সালে উচ্চশিক্ষা লাভের ছুটি বিধি লঙ্ঘন করেছেন। তথ্য গোপন করে সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন- মর্মে দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছেন কলেজ গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি এস এম শাহাবুদ্দিন টুটুল।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাহাবুদ্দিন টুটুল বলেন, আমেরিকার ডিভি পেলেও তিনি তথ্য গোপন করে উচ্চ শিক্ষার নাটক সাজিয়ে আমার পূর্বে দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতির কাছ থেকে অনৈতিক উপায়ে ছুটি নিয়ে ৫ বছর আমেরিকায় অবস্থান করেছেন, নীতিমালা উপেক্ষা করে ব্যাংক লেনদেন সম্পন্ন করছেন।

কলেজের নীতিমালায় সভাপতি ও অধ্যক্ষ দ্বারা ব্যাংকের আর্থিক লেনদেন পরিচালিত হওয়ার নিয়ম উপেক্ষা করে অধ্যক্ষ রোকসানা খানম গভর্নিং বডির আরও দুই সদস্যের স্বাক্ষর দিয়ে ব্যাংক থেকে বেতন উত্তোলন করেছেন।

আমেরিকায় অবস্থান করেও কার স্বাক্ষরে এমপিও’র অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা হলো- এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক, বেড়া শাখায় খোঁজ নিতে গেলে জানা যায়, অধ্যক্ষ রোকসানা খানম এর বেতন নিয়মিতই উত্তোলন হয়েছে।

সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করতে উক্ত কলেজে গেলে অধ্যক্ষর পক্ষে শিক্ষক কর্মচারীরা সাংবাদিককে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করে। এসময় ছবি তুলতে বাধা প্রদান করেন।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ রোকসানা খানম ডিভি লটারীতে আমেরিকায় যওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি যেহেতু আমেরিকা যাবার সুযোগ পেলামই সে কারনে আমার ইচ্ছে হল উচ্চ শিক্ষা অর্জনের। আমি গভর্নিং বডির অনুমতিক্রমেই আমেরিকা গিয়েছিলাম।

আমেরিকা থাকাকালিন বেতন উত্তোলন করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কয়েক মাস বেতন উত্তোলন করেছিলাম তার পর গভর্নিং বডি বেতন বন্ধ করে দেয়। পরে আর বেতন উত্তোলন করতে পারিনি।

উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য ছুটি নিলেও সেই শিক্ষা সনদ কলেজে জমা দিয়েছেন কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি তো উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে পারিনি তাহলে শিক্ষা সনদ জমা দিব কি ভাবে? তবে আমি চেষ্টা করেছিলাম।

এ বিষয়ে সাবেক ভারপাপ্ত অধ্যক্ষ ও রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল আলীম জানান, ‘আমাদের অধ্যক্ষ ডিভি পাওয়ার পরে দুই বছরের শিক্ষা ছুটি নিয়ে আমেরিকা যান। দুই বছর পরে এসে তিনি কোন শিক্ষা সনদ দেখাতে পারেনি।
তৎকালিন গভর্নিং বডির সভাপতি মহোদয় তাকে কলেজে যোগদান করতে দেননি। তখন তিনি আবার ছুটি বাড়ানোর আবেদন করে আবার আমেরিকা চলে যান। কিন্তু গভর্নিং বডি ছুটি বর্ধিত করেন না। তখন গভর্নিং বডির মিটিং এর মাধ্যমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু একাধিক তদন্ত কমিটির কোন প্রতিবেদন আজ অব্দি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।’

কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি এসএম শাহাবুদ্দিন জানান, ‘আমি গভর্নিং বডির সভাপতি হওয়ার পরে জানতে পারি- অধ্যক্ষ রোকসানা খানম ২০১১ সালে তৎকালীন সভাপতি আব্দুল কাদেরের কাছ থেকে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের কথা বলে স্ববেতনে প্রথমে ২ বৎসরের জন্য ছুটি নিয়ে আমেরিকায় যান।

ছুটির মেয়াদ পার হলে তিনি ছুটি বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশে ফিরে আসেন৷ তখন আমি গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলাম। আমি অধ্যক্ষকে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি সাবমিট করতে বলি, কিন্তু তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হন।
পরে জানতে পারি- তিনি প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার জন্য নয়, বরং ডিভি লটারী পেয়ে আমেরিকায় অবস্থান করেন এবং পুরোপুরি অবৈধ ছুটি নিয়ে প্রথমে দুই বছর ও উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে ছুটি ছাড়াই আরও তিন বছর- মোট ৫ বছর আমেরিকায় বসবাস করেন।

ওই ৫ বছর বসবাসকালে তিনি কৌশলে বেতনভাতাও উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি সভাপতি হিসেবে বাধা দিলে অধ্যক্ষ স্থানীয় সংসদ সদস্যকে ম্যানেজ করে আমাকে সভাপতি পদ থেকে বাতিল করিয়ে অন্যদের বিভিন্ন সময়ে গভর্নিং বডিতে নিয়ে এসে তার অবৈধ কর্মকাণ্ড গুলোকে জায়েজ করে নিয়েছেন। আমি চাই বিষয়টির একটি সুষ্ঠ তদন্ত হোক।’

এ ব্যাপারে বেড়া উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো. খবির উদ্দিন ডেইলি পাবনা ২৪.কমকে  বলেন, ‘কাশীনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রোকসানা খানম এর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কপি পেয়েছি। ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশনায় তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।’

বেড়া উপজেলা নির্বার্হী অফিসার মোহা. সবুর আলী জানান, ‘এবিষয়ে আমার জানা ছিলনা। অভিযোগের কপি পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর
           মেইলঃ dailypabna@gmail.com
  © স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ dailypabna২৪.com
Theme Customized By Shakil IT Park