ডেস্ক নিউজঃ গুড়ার প্রধান ডাকঘরের ভল্ট ভেঙে আট লাখ টাকা লুট এবং অফিস সহায়ক প্রশান্ত কুমার আচার্যকে হ ত্যা র ঘটনায় শফিকুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩ মে) সন্ধ্যায় নওগাঁর সাপাহার বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পোশাক কিনতে এসে ডাকঘরে ডাকাতির পরিকল্পনা ও ঈদের পরদিন ভল্ট ভেঙে টাকা লুট এবং হত্যার কথা স্বীকার করেছেন শফিকুল।
বৃহস্পতিবার (০৪ মে) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভল্ট ভেঙে টাকা লুট ও হত্যার ঘটনায় একজনই জড়িত। শফিকুল বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক ব্যাংকে ডাকাতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতির মামলা আছে। তিনি নওগাঁর সাপাহারের পশ্চিম করমডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার জানান, শফিকুল ঈদের আগে পোশাক কিনতে গত ১২ মার্চ মোটরসাইকেলে বগুড়ায় আসেন। পরে মোটরসাইকেল প্রধান ডাকঘরে পার্কিং করতে যান। সেখানে অর্থের লেনদেন দেখে ভল্ট ভেঙে টাকা লুটের পরিকল্পনা করেন। ওই দিন ডাকঘর ঘুরে দেখেন। ১৫ মার্চ আবারও বগুড়ায় এসে নিউমার্কেট থেকে ভল্ট ভাঙার যন্ত্রপাতি কেনেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, পরিকল্পনা অনুসারে গত ২০ এপ্রিল আবারও বগুড়ায় আসেন। মধ্যরাতে পোস্ট অফিসের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢোকেন। পরদিন সকালে প্রহরী টয়লেটে গেলে যন্ত্রপাতির ব্যাগ নিয়ে ভেতরে ঢোকেন ও সিঁড়ির কোণে লুকিয়ে থাকেন। একই দিন দুপুর সোয়া ১টার দিকে প্রহরী আবারও টয়লেটে গেলে জানালার গ্রিল ভেঙে ভল্ট রুমে ঢোকেন। টাকা সরাতে ব্যর্থ হওয়ায় সেদিন নওগাঁর ভাড়া বাসায় চলে যান।
সুদীপ কুমার বলেন, ‘ঈদের পরদিন বাসে আবারও বগুড়ায় আসেন। রাত ২টার দিকে দেয়াল টপকে বারান্দার গ্রিল ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এ সময় শব্দ শোনে প্রশান্ত কুমার জেগে যান। তিনি শফিকুলকে ধরতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে শফিকুল তার হাতে থাকা পাইপ দিয়ে প্রশান্তের মাথায় আঘাত ও পরে গলা টিপে হত্যা করেন। এরপর টাকা লুট করে সকালে গেটের বাইরে তালা দিয়ে নওগাঁয় চলে যান।’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘শফিকুল নওগাঁ সদরে গিয়ে দুই ব্যাংকে পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জমা দেন। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রামের বাড়ি সাপাহারে যান।’
বগুড়া ডিবির এসআই মজিবর রহমান বলেন, ‘স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য শফিকুলকে বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল ডাকাতি ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।’
Leave a Reply