গত পাঁচ বছর ধরে ভারতের কলকাতায় বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন পাবনার বেড়া উপজেলার মাশুন্দিয়া-ভবানীপুর কে. জে. বি. ডিগ্রি কলেজের জুনিয়র প্রফেসর বিশ্বনাথ দত্ত। প্রথম দিকে বছরে দুই-একবার দেশে এসে হাজিরা দিয়ে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন করলেও গত এক বছরে একবারও আসেননি তিনি। কলেজেও নেই হাজিরা। অথচ ভোগ করছেন বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সব সুবিধা।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রোববার (১৪ আগস্ট) অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম। এসময় অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে টিম। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, উপসহকারী পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন, মো. ফেরদৌস রায়হান বকসী ও মো. মোক্তার হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম সরেজমিনে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে কলেজটিতে রক্ষিত বিভিন্ন রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে অভিযোগের বিষয়টি এনফোর্সমেন্ট টিমের কাছে সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন শিগগিরই কমিশনে দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, বিশ্বনাথ দত্ত প্রায় পাঁচ বছর আগে পরিবার নিয়ে ভারত চলে যান। মাঝে মাঝে তিনি দেশে এসে কলেজে হাজিরা দিয়ে আবার ফিরে যান। তবে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ছুটি ছাড়াই ভারতে অবস্থান করছেন।
কলকাতায় বসবাস করলেও কাগজপত্রে কলেজে উপস্থিত দেখিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল আব্দুস ছালাম বিশ্বাস ও বিশ্বনাথের ভাই সুনিল দত্ত যোগসাজশে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। বিশ্বনাথ দত্তের চাকরির ইনডেক্স নম্বর-৪০৩৩৮৪, পাবনা বেড়া শাখা সোনালী ব্যাংক, হিসাব নম্বর-০০২০৬৩২৫১।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বনাথ দত্ত তার বড় ভাই সুনিল দত্তের কাছে ব্যাংকের চেকবই স্বাক্ষর করে রেখে গেছেন। প্রতি মাসে বেতন বইতে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল নিজেই বিশ্বনাথ দত্তের নামের ঘরে স্বাক্ষর করে বেতন ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। এরপর বেতনের পুরো টাকা উত্তোলন করিয়ে নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নেন। এছাড়া কলেজ অংশের মাসিক বেতনের পুরোটাই ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল জাল স্বাক্ষর করে আত্মসাৎ করেন।
Leave a Reply